অবস্থান সিদ্ধান্তের লক্ষ্য / উদ্দেশ্যাবলি | Objectives of Location Decision

অবস্থান সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হলো সর্বোত্তম অবস্থান নির্বাচন করা যাতে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জন সহজ হয়। অবস্থানের এ মূল লক্ষ্যটি অর্জনের পাশাপাশি আরো বেশ কিছু লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য অবস্থান সিদ্ধান্তের দ্বারা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। অবস্থান সিদ্ধান্তের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো:

১. একাধিক গ্রহণযোগ্য অবস্থান অনুসন্ধান (Find a number of acceptable location): অবস্থান নির্বাচনের জন্য একাধিক গ্রহণযোগ্য অবস্থান অনুসন্ধান করা অবস্থান সিদ্ধান্তের অন্যতম লক্ষ্য। অবস্থান অনুসন্ধানের জন্য একাধিক স্থান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে সংগৃহীত তথ্যকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ হতে ভাল- মন্দ যাচাইয়ের চেষ্টা করা হয়।

২. সর্বোত্তম অবস্থান পরীক্ষা (Examined to find the best location): সংগৃহীত তথ্যগুলো যাচাই- বাছাইয়ের পর প্রাথমিকভাবে ভাল বলে চিহ্নিত স্থান সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাও অবস্থান সিদ্ধান্ত গ্রহণের আরেকটি উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্যের আলোকে সর্বোত্তম অবস্থানকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করা হয়।

৩. সর্বোত্তম অবস্থান চিহ্নিত করা (Identifying the best locamion): অনেকগুলো বিকল্প অবস্থান হতে সকল দিক বিবেচনায় যে অবস্থানটি প্রতিষ্ঠানের জন্য উত্তম তা চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এভাবে সর্বোত্তম অবস্থান চিহ্নিত করা অবস্থান সিদ্ধান্তের আরেকটি লক্ষ্য বলে বিবেচিত হয়।

৪. প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা অর্জন (To achieve organizational efficiency): প্রতিষ্ঠানের সঠিক অবস্থানের উপর প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা অর্জন অনেকাংশে নির্ভরশীল। কারণ প্রতিষ্ঠানটি যদি সঠিক স্থানে অবস্থিত হয় তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা অর্জন সহজ হয়। অন্যথায় দক্ষতা অর্জন কঠিন হয়ে পড়ে।

৫. ব্যয় সংকোচন (Reduceing cost): ব্যয় সংকোচ করা অবস্থান সিদ্ধান্তের আরেকটি লক্ষ্য। অবস্থানটি যদি সঠিক স্থানে হয় তাহলে একদিকে যেমন কাঁচামালের ব্যয় কম হয়, অন্যদিকে তেমনি শ্রম, পরিবহন, যাতায়াতসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও ব্যয় সংকোচন অর্জন সম্ভব হয়।

৬. সহজ বিপণন (Easy marketing): সহজ বিপণন করাও অবস্থান সিদ্ধান্ত গ্রহণের অন্যতম লক্ষ্য বলে বিবেচিত হয়। এ কারণে বাজায়ের সান্নিধ্যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। এরূপ স্থানে ব্যবসায় স্থাপন করা হলে উৎপাদিত পণ্য সহজেই বাজারে প্রবেশ করতে পারে।

৭. প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা (Survival in competition): মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে বিবেচিত হয়। আর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য সঠিক স্থানে ব্যবসায় স্থাপন করা অপরিহার্য। তাই অবস্থান সিদ্ধান্তের এটিও একটি উদ্দেশ্য বলে বিবেচিত হয়।

৮. সম্প্রসারণের সুযোগ (To achieve expansion facilities): ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এমন স্থানে স্থাপন করা উচিত যাতে ভবিষ্যত প্রয়োজনে সম্প্রসারণ করা যায়। এ কারণে যে স্থানে পর্যাপ্ত পরিমাণে জমি পাওয়া যায় সে স্থানে ব্যবসায় বা কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বড় বড় কোম্পানি এ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য শহর থেকে একটু দূরে কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।।

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায়, বিভিন্ন র‍্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই অবস্থান সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক না কেন তাদের মধ্যে উপরোক্ত উদ্দেশ্যগুলো অন্যতম। তবে অবস্থান সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে আলোচিত সকল উদ্দেশ্য একত্রে অর্জন করা সম্ভব হবে তা-নয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url